অপার সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে আজ পর্যটন শিল্প।আমরা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পরিমাণ বাড়িয়ে নিতে পারতাম পর্যটন শিল্প দ্বারা।কিন্তু আমরা আদৌ কি তা করতে পারছি? দুঃখজনক হলেও সত্যি যে অপরিমেয় সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও অন্য দেশের মত এদেশের পর্যটন শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটেনি,এগিয়ে নিতে পারছিনা আমাদের পর্যটন শিল্পকে।
কেন পারছিনা আসুন খেয়াল করি-
• পর্যটন শিল্পে বাজেট সংকট• পর্যটন এলাকাগুলোতে নিরাপত্তার অভাব
• অনুন্নত যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে অনাগ্রহী পর্যটক
• ঘরের বাইরে ছিনতাই,লুন্ঠন,পকেটমার এর অত্যাচারেও কিছুটা অনাগ্রহী পর্যটকগণ
• কথায় আছে,”প্রথমে দর্শনধারী,পরে গুণবিচারী” কিন্তু আমরা নানা বর্জ্য এবং আবর্জনা দ্বারা নিজ হাতে নষ্ট করছি পর্যটনকেন্দ্র গুলোর সৌন্দর্য
• চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণেও ব্যাহত হচ্ছে পর্যটন শিল্প
• অনলাইনে পর্যটন শিল্প সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাব
এবার ঘুড়ে আসি আমাদের কিছু উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্র থেকে।দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশে প্রাকৃতিক,সাংস্কৃতিক, ঐতিহ্যিক সব সম্পদের সমৃদ্ধ। তাই,যুগ যুগ ধরে বিদেশি পর্যটকদের কাছে চির সবুজে ঘেরা বাংলাদেশ এক স্বপ্নের দেশ হিসেবে পরিচিত।আকৃষ্ট করার জন্য রয়েছে এলাকাভিত্তিক অনেক জায়গা।এখানে কিছু উল্লেখযোগ্য স্থানের কথা তুলে ধরলাম যেমন-
• ঢাকা বিভাগের মধ্যে আহসান মঞ্জিল,ঢাকেশ্বরী মন্দির,হাতিরঝিল,বসুন্ধরা সিটি,সোহরাওয়ার্দী উদ্যান,ধানমন্ডী লেইক,রবীন্দ্র সরোবর, নভোথিয়েটার, ফ্যান্টাসি কিংডম, সোনারগাঁ, পানাম নগর,লাঙলবন্দ,মেরী এন্ডারসন(টাঙাইল এর ভাসমান রেস্তোরা), বঙ্গবন্ধু সেতু,যমুনা রিসোর্ট ইত্যাদি
• চট্টগ্রাম বিভাগে আছে সীতাকুণ্ড, বারো আউলিয়ার মাজার,কৈবল্যধাম, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত,ফয়েস লেইক,সন্দীপ ইত্যাদি
• সিলেটে পাবেন জাফলং,বিছনাকান্দি,তামাবিল,লালাখাল,মালিনীচেড়া, লাক্কাতুরা টি এস্টেট, রাতারগুল,হযরত শাহজালাল (রঃ) এবং হযরত শাহপরান এর মাজার,জাকারিয়া সিটি সহ আরো অনেক
• রাজশাহী বিভাগের মধ্যে বগুড়ার মহাস্থানগড়, পাবনার তাতীবন্দ জমিদারবাড়ি, জয়পুরহাট এর নান্দাইল দীঘি, নওগার পাহাড়পুর,বৌদ্ধবিহার,হলুদবিহার,আলতাদীঘি
• বরিশাল বিভাগে গেলে পাবেন দুর্গাসাগর,শারকেলের দুর্গ,রামমোহন এর সমাধি,চাখার প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর
• খুলনার সুন্দরবন, রাড়ুলি,বকুলতলা,মহিম দাশের বাড়ি
• রংপুর বিভাগে পায়রাবন্দ, ভীণ্ণোজগৎ,তাজহাট জমিদারবাড়ি, দিনাজপুর এর কান্তজিউর মন্দির,রামসাগর, স্বপ্নপুরী,রাজবাড়ি, পঞ্চগড় এর ভিতরগড়,মহারাজার দীঘি, তেঁতুলিয়া ডাকবাংলো, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট
এছাড়াও আছে নানা জানা, না জানা কত্ত জায়গা।তাছাড়া আমার মতে আমাদের গ্রাম-বাংলার দৃশ্য ও ঐতিহ্য গুলোও যথেষ্ট পর্যটকদের মন আকৃষ্ট করতে।
তাহলে একদিকে যেমন আমরা এসব জায়গার সৌন্দর্য দ্বারা পর্যটকদের মনোরঞ্জন করতে পারছি,অন্যদিকে পারছি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে যা দেশের উন্নয়নে অন্যতম ভুমিকা পালন করবে।১৯৯৯ সালে পর্যটন খাত থেকে আয় ছিল ২৪৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা,যা ২০০৮ এ ৬১২ কোটি ৪৫ লাখ ২০ হাজার হয় এবং ২০১৩ তে বেড়ে গিয়ে তা ৯৪৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকায় পৌঁছায়।
যেখানে আয় দিন দিন বাড়ছেই সেখানে পর্যটন শিল্পকে গুরুত্ব না দেয়াটা কি একধরনের বোকামি হচ্ছে না?
দেশ কিন্তু আমার,আপনার,সবার আর দেশের উন্নয়ন মানেই আমাদের উন্নয়ন।তাহলে কেনো এগিয়ে আসবো না আমরা দেশের উন্নয়নে সাহায্য করতে।প্রত্যেক জিনিসের ই সুবিধা,অসুবিধা দুদিকই আছে।আসুন সুবিধার কথা বিবেচনা করে চেষ্টা করি অসুবিধা গুলোকে কাটিয়ে তুলতে।
সরকার একা ডঙ্কা বাজিয়ে বা একা উদ্যোগ নিয়ে পারবেনা সমস্যা সমাধান করতে,পারবেনা পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে রক্ষা করতে এবং পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন সাধন করতে।উনি তো জায়গায় জায়গায় গিয়ে খবরদারি করে বেড়াতে পারবেন না।উনি সুযোগ করে দিবেন আর এগিয়ে আসতে হবে আমাদের।আসুন এগিয়ে আসি পর্যটন কেন্দ্র গুলোকে রক্ষা করতে,তাদের সৌন্দর্য বজায় রাখতে,পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে এবং দেশের উন্নয়নে সহযোগিতা করতে।
আমরা পারবো তো? উত্তর আপনার কাছে……
Courtesy By:Blog
Recomended: